এক মাসের মধ্যে এটিইও প্রার্থীদের আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ


Shikkha Songbad প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২০, ২০২৩, ৩:৫৭ অপরাহ্ণ /
এক মাসের মধ্যে এটিইও প্রার্থীদের আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ
0Shares

সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) নিয়োগে জটিলতা নিরসনে সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত একমাসের মধ্যে প্রার্থীরা পিএসসিতে যে আবেদন করেছেন, তা নিষ্পত্তি করে বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলেছেন।

এটিইও প্রার্থীদের করা রিটের ওপর বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত এ নির্দেশনা দেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রিটকারীদের আইনজীবী মো. তরিকুল ইসলাম। তিনি জানান, এটিইও পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে হঠাৎ পরিবর্তন ও আবেদন বন্ধ করায় ৩১ জুলাই রিটটি করা হয়। ৬ আগস্ট শুনানি শেষে আদালত বলেছিলেন পিএসসি কী নির্দেশনা দেয়, তা দেখতে। এরপর দুই মাস পার হলেও পিএসসি বিষয়টি স্পষ্ট করেনি। এটি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

আইনজীবী তরিকুল ইসলাম বলেন, আজকের শুনানি শেষে আদালত পিএসসিকে একমাসের মধ্যে প্রার্থীরা যে আবেদন করেছেন, তা নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে সংশোধনী আনা হবে নাকি সব (দুই বছরের কম অভিজ্ঞ) সহকারী শিক্ষকের আবেদনের সুযোগ রাখবে তা স্পষ্ট করে জানাতে বলেছেন আদালত। পিএসসি কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখে পরবর্তীতে আমরা করণীয় ঠিক করবো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৬ জুন সমন্বিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। সেখানে ৪০ নম্বর ক্রমিকে ১৫৯ জন এটিইও পদে নিয়োগের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন চাওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিভাগীয় প্রার্থী বলতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষক (অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর) এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। তবে নিচে আবেদন নির্দেশিকায় বলা হয়- এ পদে আবেদনের জন্য প্রাথমিকের শিক্ষকের কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে।

পরে নতুন শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় যোগাযোগ করতে থাকেন। মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্টভাবে শিক্ষকদের জানানো হয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। পরে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত আবেদন করেন।

১৭ জুলাই মন্ত্রণালয় পিএসসিকে এ বিষয়ে চিঠি দেয়। সেখানে বিদ্যমান বিধিমালা (তৎকালীন বিধিমালা) উল্লেখ করে এটিইও পদে নিয়োগ যোগ্যতার শর্ত সংক্রান্ত জটিলতা অবসান ও বিজ্ঞপ্তি সংশোধনের প্রয়োজন হলে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করা হয়।

এরপর আবেদন নির্দেশিকা থেকে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয় পিএসসি। ফলে বিভাগীয় কোটায় পূরণযোগ্য ১৫৯ পদে এটিইও নিয়োগে ১ জুলাই থেকে অনলাইনে যে আবেদন শুরু হয়েছিল, তাতে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও আবেদন করার সুযোগ পান।

৩১ জুলাই পর্যন্ত এ পদে আবেদন প্রক্রিয়া চলার কথা ছিল। কিন্তু আবেদন চলাকালে ২৪ জুলাই আবারও নিয়মে পরিবর্তন আনে পিএসসি। কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘর হঠাৎ যুক্ত করা হয়। এতে ফের জটিলতায় পড়েন নতুন শিক্ষকরা। তারা পিএসসি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে আবারও যোগাযোগ করে অভিযোগ জানাতে থাকেন। পিএসসির কোনো সাড়া না পেয়ে প্রার্থীরা রিট করেন।

রিটকারী প্রার্থী গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. রাফিউল ইসলাম রাফি বলেন, আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার মাত্র একদিন আগে পিএসসি তা স্থগিত করে দেয়। আড়াই মাস পার হলেও এ নিয়ে তারা কোনো কিছু স্পষ্ট করছেন না। এজন্য আমরা আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছি।

নিয়োগ বিধিমালার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, যে বিধিমালা অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কোনো অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ নেই। যে কোনো সহকারী শিক্ষক এ পদে আবেদনের অধিকার রাখেন। পিএসসি হঠাৎ দুই বছরের অভিজ্ঞতা যুক্ত করে। এতে স্পষ্টভাবে আমাদের অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে। পিএসসি আগের বিধিমালা অনুযায়ী এ বিজ্ঞপ্তিতে আমাদের আবেদন ও পরীক্ষা দেওয়া সুযোগ রাখবে বলে আশা করছি।

জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (নন-ক্যাডার) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি জানি না। কিছু জটিলতার কারণে তখন এটিইও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। নতুন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

0Shares