স্কুলে ভর্তিতে জন্মসনদে প্রতারণা করলেই আবেদন বাতিল


Shikkha Songbad প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২০, ২০২৩, ৩:০৮ অপরাহ্ণ /
স্কুলে ভর্তিতে জন্মসনদে প্রতারণা করলেই আবেদন বাতিল
0Shares

চলতি বছরে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা আগামী জানুয়ারিতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগেই আগামী নভেম্বর মাসে সারাদেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে লক্ষ্যে আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তির আবেদন। আবেদন চলবে আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত। বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচিত হবে লটারির মাধ্যমে।

সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া তুলে ধরে আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ার তারিখ, সময় ও স্থান পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

প্রথম শ্রেণিতে ৫ শতাংশ সহোদর কোটা:

বর্তমান সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা প্রত্যেক শ্রেণিতে সহোদর কোটায় ৫ শতাংশ থাকলেও নতুন নীতিমালায় তা শুধু প্রথম শ্রেণিতে এ কোটা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ ভাইবোনের কোটায় শুধু প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে হতে পারবে। অনান্য শ্রেণিতে এ কোটা প্রযোজ্য হবে না।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও ‍উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর বেলাল হোসাইন বলেন, এক সময় সহোদর কোটা ছিল অনির্ধারিত। ভাই বোনের মধ্যে যে কেউ একটি স্কুলে ভর্তি হলে পরের জন সহোদয় কোটায় অটো ভর্তি হতো। গত বছর সেটা ৫ শতাংশ করা হয। এতেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই এবার শুধু প্রথম শ্রেণিতে ৫ শতাংশ কোটা বহাল থাকবে।

এক জন্ম সনদ দিয়ে একাধিক আবেদনে করলেই বাতিল

লটারিতে ভর্তি কাযক্রম শুরুর হওয়ার পর কিছু অভিভাবক সন্তানের ভর্তি নিশ্চিত করতে নানা ধরনের ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়। এরমধ্যে বাচ্চার জন্ম নিবন্ধনের নাম এদিক-ওদিক করেন, জন্ম সনদের নম্বর ভিন্ন করে একই স্কুলে একাধিক আবেদন করেন। এটা জানাজারি হওয়ার পর গত বছর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা দেওয়া হয়, ভর্তির সময় শিক্ষার্থীর জন্ম সনদ নাম্বার, নাম এসব বিষয় ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। প্রয়োজনে অনলাইনে যাচাই করে ভর্তি করাতে হবে।

ওই সময় শিক্ষামন্ত্রী জানান, এগুলো যারা করেছেন সবাই ধরা পড়েছে। কারণ, ভর্তির সময় জন্ম নিবন্ধন যাচাই করেই ভর্তি করানো হবে। এসব শিক্ষার্থী কোনোভাবেই ভর্তি হতে পারবে না।

এ ধরনের প্রতারণা বন্ধ করতে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। কোনো অভিভাবক একই জন্ম সনদকে এদিক-ওদিক করে আবেদন করলে পুরো আবেদনই বাতিল হয়ে যাবে। অর্থাৎ তার বাচ্চা আর এই স্কুলের ভর্তির জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবে।

প্রফেসর বেলাল হোসাইন বলেন, গত বছর কয়েকজনকে ধরার পর এবার নতুন সিদ্ধান্ত দিয়েছি। আবেদনের ফরমে মিথ্যা তথ্য ও এডিট করলে সব আবেদন বাতিল করা হবে।

আবেদন ফি বাড়েনি

এবারও ভর্তির আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা। যা শুধুমাত্র টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে। এ বছর বিদ্যালয় থেকে কোনো ভর্তি ফরম বিতরণ করা হবে না। শুধু অনলাইনে (https://gsa.teletalk.com.bd) আবেদন করা যাবে।

২০২৪ শিক্ষাবর্ষে স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীর বয়স ৬ বছরের বেশি হতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এ বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া

ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনলাইনে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া ২৪ অক্টোবর সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে ১৪ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে।

এতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক বা কর্মচারীদের ভর্তির উপযুক্ত সন্তান সংখ্যার সমসংখ্যক আসন ওই প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত থাকবে। তাদের অনলাইনে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। তাদের ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালিকা হলে পার্শ্ববর্তী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে। সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ার তারিখ, সময় ও স্থান পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া

ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশের মহানগর পর্যায়ের বিভাগীয় সদরের মেট্রোপলিটন এলাকা ও জেলা সদরের সদর উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রেও কোনো ভর্তি ফরম বিতরণ করা হবে না। ভর্তির আবেদন ফরম শুধুমাত্র অনলাইনে (http://gsa.teletalk.com.bd) পাওয়া যাবে। অনলাইনে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া ২৪ অক্টোবর সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে ১৪ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। আবেদন ফি ১১০ টাকা। যা শুধুমাত্র টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।

আবেদনের সময় মহানগর পর্যায়ের জন্য বিভাগীয় সদরের মেট্রোপলিটন এলাকা এবং জেলার সদর উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবেন। প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ ৫টি বিদ্যালয় পছন্দ দেওয়া যাবে। ডাবল শিফট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। একই পছন্দক্রমের বিদ্যালয় কিংবা শিফট দ্বিতীয় বার পছন্দ করা যাবে না।

কেন্দ্ৰীয় ডিজিটাল দৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় বাইরের ভর্তি কমিটির প্রতিনিধির উপস্থিতিতে দৈবচয়ন কার্যক্রমের আয়োজন করতে হবে। ডিজিটাল দৈবচয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যতিত অন্য কোনো পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে না। ১ম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স ৬ বছর প্লাস নির্ধারিত হবে।

এছাড়া, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থায়ীভাবে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকা/কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের (যদি থাকে) ভর্তির জন্য সমসংখ্যক আসন ওই প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত থাকবে। এক্ষেত্রে তাদের অনলাইনে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। তাদের ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালিকা হলে পার্শ্ববর্তী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।

0Shares