স্কুল-কলেজের নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন বোর্ড ও ডিসির প্রতিনিধি


Shikkha Songbad প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২১, ২০২৪, ১:১৭ অপরাহ্ণ /
স্কুল-কলেজের নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন বোর্ড ও ডিসির প্রতিনিধি
0Shares

বেসরকারি স্কুল-কলেজে সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক ছাড়া বাকি ১৫ পদে নিয়োগের কমিটিতে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) প্রতিনিধি থাকবেন। পাঁচ সদস্যের এ নিয়োগ কমিটিতে শিক্ষা বোর্ড ও মাউশির একজন করে প্রতিনিধিও থাকতে হবে। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতি পদের বিপরীতে কমপক্ষে তিনজন প্রার্থী থাকতে হবে।

বেসরকারি স্কুল-কলেজে নিয়োগের নতুন নীতিমালায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান স্বাক্ষরিত এ নিয়োগ নীতিমালা জারি করা হয়েছে ১১ জানুয়ারি।

বেসরকারি স্কুল-কলেজে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও বিভিন্ন কর্মচারী নিয়োগ দিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি। এসব নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে হরহামেশা। স্কুলে সহকারী শিক্ষক ও কলেজে প্রভাষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করে শিক্ষক ও নিবন্ধন প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ)।

নতুন নিয়োগ নীতিমালা তৈরির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএর আওতা (প্রবেশ পর্যায়ের পদ) ছাড়া অন্যান্য পদে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি নিয়োগ দেয়। এই নিয়োগে প্রতিষ্ঠানভেদে পদ্ধতিগত ভিন্নতা রয়েছে। এসব পদে নিয়োগ কার্যক্রমে অভিন্নতা ও স্বচ্ছতা আনতে এ নির্দেশমালা জারি করা হলো।

বর্তমানে দেশে বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ হাজার ৩১৬, কলেজ ২ হাজার ৬৬৪ ও আলিয়া মাদ্রাসা ৯ হাজার ২৯২টি। বাকিগুলো কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি পদে নিয়োগ দেয় এনটিআরসিএ। এর বাইরে বেশ কিছু পদে নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি। অনেকে ক্ষেত্রে এসব নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ কারণেই সব প্রতিষ্ঠানের জন্য অভিন্ন নিয়োগ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নতুন নীতিমালায় নিয়োগ পরীক্ষার কমিটি, সিলেবাস, মানবণ্টন, পদ্ধতি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। তাঁদের আশা, এতে নিয়োগ কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ হবে।

নীতিমালায় ১৫ পদে নিয়োগের উল্লেখ রয়েছে। এসব পদকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষক গ্রুপে রয়েছে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ। কর্মচারী গ্রুপে আছে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, ট্রেড অ্যাসিস্ট্যান্ট, ল্যাব সহকারীর পদ। অফিস সহায়ক গ্রুপে রয়েছে অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী ও আয়ার পদ।

নিয়োগ পরীক্ষার নম্বর বণ্টন ও সময়, লিখিত পরীক্ষার মূল্যায়ন, ব্যবহারিক এবং মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম ও মূল্যায়ন পদ্ধতি, ফল তৈরি, নিয়োগের সুপারিশ, ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির করণীয় কী হবে, তা-ও নতুন নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, পাঁচ সদস্যের নিয়োগ কমিটির সভাপতি থাকবেন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতি, সদস্যসচিব থাকবেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান। অন্য তিন সদস্য হবেন মাউশি, শিক্ষা বোর্ড ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি। ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’ এবং এর সর্বশেষ পরিমার্জন অনুযায়ী যথাযথ যাচাই করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শূন্য বা নবসৃষ্ট পদের প্রাপ্যতা নিরূপণ করবে। শূন্য পদের ধরন (কাঠামোভুক্ত, সৃষ্ট, অননুমোদিত সৃষ্ট, খণ্ডকালীন, চুক্তিভিত্তিক) উল্লেখ করে শূন্য পদের বিবরণী প্রণয়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি না থাকলে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।

নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, প্রাপ্যতাবিহীন পদে কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী নিয়োগ করা হলে তার দায়ভার নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার ওপর ব্যক্তিগতভাবে বর্তাবে। নিয়োগ করা শিক্ষক-কর্মচারীর শতভাগ বেতন-ভাতা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে। এমন কারও এমপিওভুক্তির জন্য মাউশিতে প্রস্তাব পাঠানো যাবে না।

0Shares