অবশেষে অনলাইনে ক্লাস শুরু করলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) রাতে অনলাইন ক্লাস উদ্বোধন করেন শিক্ষান্ত্রী ডা. দীপু মনি। শুক্রবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা ও বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সীমাবদ্ধতার পরও শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইন ক্লাস শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ভার্চুয়াল এই্ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে ডিভাইস এবং স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা পায় সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। আশা করছি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আমরা জানাতে পারবো।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘যেকোনও সংকট শুধু সমস্যাকেই নিয়ে আসে না সম্ভাবনার দ্বারও উন্মুক্ত করে। এই মহামারি পরিস্থিতিতেও আমরা সেই শিক্ষা পেলাম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর জন্য যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেটা হয়তো আরও ১০ বছর পরে নেওয়া হতো। কিন্তু সেই উদ্যোগ এখনই নেওয়া হলো, এটি সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা হিসেবে দেখা দিয়েছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন— সেগুলো করোনা পরবর্তী সময়েও কাজে আসবে। আমাদেরকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন কোর্স অফার করতে হবে। নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি এটিও চালু করতে হবে। কারণ, যারা কাজে ঢুকে যাবে তাদেরকেও সুযোগ দিতে হবে। কর্মক্ষেত্রে ঢুকেও যেন তারা সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালু করতে যে কার্যক্রম নিয়েছে সেটা প্রশংসনীয়।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এই করোনা মহামারি পরিস্থিতি অনলাইন শিক্ষার একটা অপরচুনিটি। কারণ,এই প্যানডেমিক সিচুয়েশন কবে যাবে সেটা আমরা জানি না। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এই সুযোগটাকে অ্যামব্রেস করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম সফল করতে হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও বিকল্প নেই। কারণ, এটি সমগ্র বাংলাদেশকে কাভার করে।’
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘করোনা মহামারি পরিস্থিতির শুরু থেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর জন্য কলেজগুলোকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক ও সুসংগঠিতভাবে অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর জন্য আমাদের এই উদ্যোগ। এই কার্যক্রমের আওতায় অনলাইনে ১৪৫৮ জন শিক্ষকের ১৪৫৮টি কোর্সে মোট ১৭ হাজার ৫০০টি ভিডিও ক্লাস অপলোড করা হবে। ৩১টি ডিসিপ্লিনের এই অনলাইন ক্লাস নেওয়া সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। একজন শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খুব সহজে এই ভিডিও ক্লাস দেখতে পাবে।’
উপাচার্য বলেন, ‘আজকে আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছি, এটি সম্ভব হতো না যদি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার আমাদের না দেখাতো। এই জন্যই দেশ উন্নয়নে ভিশনারি পলিটিক্যাল লিডার দরকার হয়। দেশ পরিচালনায় ভিশন লাগে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন ভিশিওনারি পলিটিক্যাল লিডার। তার ভিশনের ওপরেই বর্তমানে আমরা চলছি। তার যে শিক্ষা ভাবনা ছিল সেই শিক্ষাভাবনাই আমাদের মূলভিত্তি। তার দর্শন নিয়েই আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করছি।’
ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা প্রবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ধন্যবাদ জানান উপাচার্য।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, ‘বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন দফতরের প্রধান, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :