আইসিটি লেকচারার সংকট উত্তরণের উপায়


শিক্ষা সংবাদ প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ২:৩৯ অপরাহ্ণ /
আইসিটি লেকচারার সংকট উত্তরণের উপায়

লেখা : ড. মোঃ শরিফুল ইসলাম

২০২০ ও ২০২১ সালে HSC তে ICT পরীক্ষা হয়নি, ২০২২ সালেও পরীক্ষা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে মাউশি। আবার ২০২৩, ২০২৪ সালেও পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত ২০২৫ সালের সিলেবাসও সংক্ষিপ্ত হবে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে জানা গেছে অনেক কলেজে ICT Lecturer এর পদ শূণ্য। বিষয়টি আবশ্যিক অথচ পরীক্ষা হচ্ছে না, এমন চলতে থাকলে একটি জেনারেশন এর মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তিগত জ্ঞানের গ্যাপ দেখা দিবে বলে শংকিত শিক্ষা বিশেষজ্ঞ মহল।

৮ম শিক্ষক নিবন্ধন পর্যন্ত ICT Lecturer এর শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলো ৩ ক্যাটাগরির। (ক) CSE তে কমপক্ষে ৪ বছরের অনার্স ও নিবন্ধন সনদ (খ) M.Sc +৬ মাসের প্রশিক্ষণ সনদসহ নিবন্ধন ও (৩) যে কোন বিষয়ে মাস্টার্স+ ৬ মাসের প্রশিক্ষণ সনদসহ নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। দ্বাদশ শিক্ষক নিবন্ধন থেকে যুগের চাহিদা ও মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সরকার শুধুমাত্র CSE ধারীদের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করেছে। এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

কিন্তু CSE ধারী শিক্ষকবৃন্দ কেউ কেউ এ পেশায় আসতে চান না। ২০১৬ সালে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৩৮ তম বিসিএসে সরকারি কলেজে ২৫৫টি পদে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল। কিন্ত লিখিত পরীক্ষায় মাত্র ৫ জন পাস করেছিল। সরকারি কলেজগুলোতে অন্য বিষয়ের শিক্ষকবৃন্দই আইসিটি বিষয় পড়িয়ে থাকেন। তাহলে বেসরকারি কলেজে ICT বিষয়ে NTRCA সনদপ্রাপ্ত শিক্ষকবৃন্দ পাঠদান করালে সমস্যা কোথায়?

HSTTI কুমিল্লাতে ২৭ দিনের প্রশিক্ষনে গিয়ে ২০ জনের মধ্যে ১ জন CSEধারী পেয়েছিলাম। আবার ঢাকা BANBEIS এ ১৫ দিনের প্রশিক্ষনে গিয়ে ২১ জনের মধ্যে ১ জন CSEতে ডিপ্লোমাধারী পেয়েছিলাম। বোর্ডের বিভিন্ন গুরুত্তপূর্ণ কাজে গিয়েও বিষয়টি আমি লক্ষ্য করেছি। কেউবা মাদ্রাসায় যেতে অনিচ্ছুক। কেউবা গ্রামের কলেজে যেতে অনীহা। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেওয়ার জন্য অনেক খন্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের। কোন কোন মাদ্রাসায় তো অফিস সহকারীও উক্ত ক্লাস নেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে সুবিধা করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। যা কখনো কাম্য নয়।

৩য় ক্যাটাগরির অনেক শিক্ষককে দেখেছি যারা অনেক পরিশ্রম করে নিজেকে তৈরি করেছেন। ব্যবহারিক ও তাত্তিক জ্ঞান বেশ ভাল, ক্লাস কন্ট্রোল, কঠিন বিষয় সহজভাবে উপস্থাপনে বেশ দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। অনেকে মাস্টার ট্রেইনার ও প্রশ্নকর্তা হয়েছেন। আসলে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেকেরই আছে কিন্তু যোগ্য শিক্ষক হাতে গোনা।

গ্রামের কলেজ, মাদ্রাসা ও স্কুল এন্ড কলেজে যদি ৩য় ক্যাটাগরির শিক্ষক সুযোগ পান তিনি তার অবস্থানে মোটামুটি সন্তষ্ট থাকবেন। যে কোন বিষয়ের শিক্ষকের নিবন্ধনের সুযোগ দিলে পাশ করবে এমন সংখ্যা খুবই সামান্য। তবুও তো ‘নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো”। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন একান্তই জরুরী।

………

লেখক

আইসিটি লেকচার, গবেষক ও কলামিস্ট

আমাদের ফেসবুক পেজে দেখুন