তুরস্কে স্কলারশিপসহ উচ্চ শিক্ষার সুযোগ, আবেদনের লিংক সহ বিস্তারিত দেখুন


শিক্ষা সংবাদ প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২০, ২০২০, ৮:০৮ অপরাহ্ণ / ৪৪৭
তুরস্কে স্কলারশিপসহ উচ্চ শিক্ষার সুযোগ, আবেদনের লিংক সহ বিস্তারিত দেখুন
0Shares

শিক্ষা সংবাদ : উসমানিয়া খিলাফতের কেন্দ্রবিন্দু, ঐতিহ্য, শিল্প, সংস্কৃতি আর বিশ্বরাজনীতিতে আলোচনায় থাকা তুরস্ক সরকারের ঘোষিত তুরস্ক সরকারি স্কলারশিপের আবেদন শুরু হয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে একযোগে শুরু হওয়া এই আবেদন ১০ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে। চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ব্যাচেলর, মাস্টার্স আর পিএইচডি অধ্যয়নে ইচ্ছুক ছাত্ররা স্কলারশিপের ওয়েবসাইট থেকে বিনা ফিতে এই আবেদন করতে পারবেন।
আপনারা যারা স্কলারশিপ নিয়ে দেশের বাইরে পড়াশুনার জন্য নিজেদের মানসিকতা তৈরি করেছেন কিন্তু ভালো কোনো স্কলারশিপের তথ্য না পাওয়ায় আবেদন করতে পারছেন না তাদের জন্যই তুরস্কের সরকারি স্কলারশিপ নিয়েই এই প্রতিবেদন।

স্কলারশিপ পরিচিতি :

তুরস্ক সরকারি স্কলারশিপ মূলত তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে কালচার এবং ট্যুরিস্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ণঞই এর রক্ষণাবেক্ষণে দেয়া হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপের অধীনে বিশ্ব থেকে প্রতি বছর লক্ষাধিক আবেদনের মধ্য থেকে বাছাই করে তিন স্তরে মোট ৫ হাজার ছাত্রকে নির্বাচিত করা হয়। তবে রিসার্চের জন্যও প্রতি বছর বেশ কিছু গবেষণায় ইচ্ছুকদেরও এই স্কলারশিপ দেয়া হয়। বিগত বছরগুলো পর্যালোচনা করলে বাংলাদেশ থেকে এই তিন লেভেলে প্রতি বছর গড়ে ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন।

কী কী সুবিধা নিয়ে থাকছে এই স্কলারশিপ :

অনার্স লেভেলের জন্য সাধারণত চার বছর মেয়াদি মূল কোর্সের সাথে এক বছর তার্কিশ ভাষা কোর্সের যাবতীয় খরচ এবং মাসে নগদ ৮০০ তার্কিশ লিরা। সরকারি ছাত্রাবাসে থাকা ও খাওয়ার ফ্রি সুবিধা। মাস্টার্সের জন্য দুই বছর মেয়াদি মূল কোর্সের সাথে ভাষা কোর্সের খরচ, মাস্টার্সে অধ্যয়নরত এবং বিবাহিত ছাত্রদের যারা সরকারি ডরমেটরিতে থাকবেন না তাদের জন্য দ্বিতীয় বছর থেকে ৫৫০ লিরা বাসা ভাড়া। আর মাসে ১১৫০ লিরা নগদ স্টাইপেন। পিএইচডির জন্য চার বছর মেয়াদি মূলকোর্স আর ভাষা কোর্সের সাথে থাকছে মাসিক নগদ ১৬০০ তার্কিশ লিরা এবং বাসা ভাড়া বাবদ ৫৫০ লিরা। এ ছাড়াও সব ছাত্রদের জন্য থাকছে তুরস্কে অবস্থানকালীন সময়ের জন্য সরকারি হেলথ বীমা। সেই সাথে তুরস্কে প্রথম আসা আর শিক্ষা শেষে যাওয়ার সময়ের বিমান টিকিট।

আবেদনকারীর বয়স :

২০২০ সালে আবেদনকারীর অনার্সের জন্য ২১ বছর, মাস্টর্সের জন্য ৩০ আর পিএইচডির জন্য ৩৫ বছরের বেশি না হওয়া।

আবেদনের সময়কাল :

২০২০ সালের আবেদনের সময়কাল ১০ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। যারা আবেদন করতে ইচ্ছুক তারা (www.turkiyeburslari.gov.tr) ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের জন্য নিচে ক্লিক করুন :

কী কী প্রয়োজন আবেদনের জন্য :

তুরস্ক সরকারি স্কলারশিপের আবেদন করতে আপনাকে রেডি করতে হবে বিগত পরীক্ষার সব মূল কাগজপত্র।
১. বিগত পরীক্ষার সব সার্টিফিকেট
২. সব মার্কশিট
৩. ২টি রেফারেন্স লেটারস
৪. পাসপোর্ট বা জন্মনিবন্ধন
৫. পাসপোর্ট সাইজের ছবি
৬. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা প্রতিযোগিতা থেকে পাওয়া নানান যোগ্যতার সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
৭. মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য কোনো লেখা পাবলিকেশন (যদি থাকে) তার কপি বা লিংক।
যেহেতু প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে সে ক্ষেত্রে প্রথমে উপোরোক্ত সব ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি লাগবে। আর যখন ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকবে, তখন সব মূল ডকুমেন্ট দেখাতে হবে। সাথে যারা জন্মনিবন্ধন দিয়ে আবেদন করেছে তাদের পাসপোর্ট দেখানো ভালো।
আবেদন করতে অনার্স লেভেলের জন্য এইচএসসি বা আলিমে সর্বনিন্ম জিপিএ ৪.০০ অর্থাৎ ৭০ ভাগ মার্কস। মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য আগের লেভেলগুলোতে সর্বনিন্ম ৭৫ শতাংশ থাকতে হবে। যারা মেডিক্যালের জন্য আবেদন করতে চান তাদের জন্য ৯০ শতাংশ মার্কস থাকা বাধ্যতামূলক।

পড়াশুনার মাধ্যম :

যারা তুরস্কে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চায় তাদের প্রথমেই মাথায় যে ব্যাপারটি সেভ করে নিতে হবে তা হলো এখানে এসে তার্কিশ ভাষায় পড়তে হবে। এরপর যদি কারো ভার্সিটি গ্রহণ করে আর ব্যক্তির ওঊখঞঝ, ঞঙঋঊখ বা অন্য কোনো ইংলিশ লেভেল প্রমাণ করে এমন প্রফেসিয়েন্সি এক্সাম রেজাল্ট থাকে সেটা দেখাতে হবে।। তবে হ্যাঁ, যেহেতু সবাইকে এক বছর তার্কিশ ভাষা শিখানো হবে আর পরিবেশের কারণে সবাই তার্কিশ ভাষা শিখে ফেলবেন তাই আপনি এই ভাষায় পড়তে সক্ষম হবেন। বাংলাদেশেও এই সার্টিফিকেটের পূর্ণমান দেয়া হয়।

যে বিষয়গুলোয় আবেদন করতে পারবে :

বাংলাদেশের একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিভাগভিত্তিক যেসব বিষয়ে আবেদন করতে পারে, এখানে তার থেকেও আপনাদের পছন্দমতো আরো বেশি বিষয়ে আবেদন করতে পারবেন।

বাছাইপ্রক্রিয়া :

অসংখ্য ছাত্র থেকে আবেদন করার সময় আপনাদের পছন্দ করা বিষয়গুলো থেকে (আপনি ৬ থেকে ১২টি বিষয় পছন্দ করতে পারবেন, সাথে বিশ্ববিদ্যালয়) আপনার সার্বিক রেজাল্ট অনুযায়ী যোগ্য মনে হলে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হবে। তবে এখান থেকেই সাধারণত বিশাল একটা ভাগ বাদ পড়ে যায়। ইন্টারভিউয়ের জন্য যাদের ডাকা হয়ে থাকে তাদের থেকে বাছাই করে চূড়ান্ত ফলাফল শিক্ষার্থীর মেইলের মাধ্যমে দেয়া হয়।

চূড়ান্ত বাছাইয়ের পর :

যদি আপনি চূড়ান্ত বাছাই হন এরপর আপনাকে আপনার সব ডকুমেন্ট তার্কিশ ভাষায় অনুবাদ করাতে হবে। পাসপোর্ট আর এম্বাসি থেকে নির্ধারিত মেডিক্যালে গিয়ে মেডিক্যাল টেস্ট সম্পন্ন করে বাকি সব ডকুমেন্ট নিয়ে বাংলাদেশে তার্কি এম্বাসিতে ভিসার আবেদন করবে। তারা নির্ধারিত সময়ে ভিসা প্রদান করলেই আপনি ভিসা ও টিকিট পেয়ে যাবেন।

0Shares